ইবিতে জুনিয়র কতৃক সিনিয়র লাঞ্ছিত

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) মাঝরাতে সংঘবদ্ধ জুনিয়র শিক্ষার্থীরা এক সিনিয়র শিক্ষার্থীকে লাঞ্চিত ও মারধর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে জুনিয়রদের বিরুদ্ধে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ল’ এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের হুজ্জাতুল্লাহ ভূইয়া তার বন্ধুদের সাথে নিয়ে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের জহরুল ইসলাম রিংকুকে মারধর করেন বলে জানা যায়।

বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে আনুমানিক ২ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়াউর রহমান হলের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এসময় তারা হলের লাইট বন্ধ করে ভুক্তভোগীকে মারধর করেছেন বলে এমনটাই প্রকাশ্যে এসেছে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রিংকু বলেন, ৩ দিন আগে হুজ্জাতুল্লাহকে লুঙ্গি পড়ে ক্যাম্পাসে ঘোরাঘুরি করতে দেখায় আমি তাকে বহিরাগত মনে করে নাম আর ডিপার্টমেন্টের পরিচয় জিজ্ঞেস করি। পরে তাকে আর কিছু না বলে চলে আসার সময় তারা আমার উপর ক্ষুব্ধ হয়ে আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করলে কথা কাটাকাটি হয়। পরে আজ মধ্য রাতে আমি চা খেতে শেখপাড়া বাজারে যাই। বাজার থেকে আসার পথে জিয়া হলের সামনে আমাকে একা পেয়ে ১২-১৫ জন আগে থেকেই হলের লাইট বন্ধ করে লাঠি-স্টাম্প দিয়ে মারধর করে হলে পালিয়ে যায়।

অভিযুক্ত হুজ্জাতুল্লাহ ভূইয়া এ বিষয়ে জানান, তিনদিন আগে রাতে তিনি আমার পরিচয় জানতে চাইলে আমি পরিচয় দেই। পরে আর কিছু জানতে চান কিনা জিজ্ঞেস করলে তিনি আমার উপর চড়াও হয়ে আমার গায়ে হাত তুলেন। পরে আমার বন্ধুদের মধ্যে বিষয়টি জানাজানি হলে গতকাল রাতে তার সাথে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে বলে জানতে পেরেছি। তবে আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। আমি পরে এসেছি।

এ বিষয়ে জিয়াউর রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মনজুরুল হক বলেন, হলের লাইট বন্ধ কিংবা জ্বালিয়ে যেভাবেই হোক একজন শিক্ষার্থীকে অন্য শিক্ষার্থীর মারধরের কোনো অধিকার নেই। বিষয়টি আমি তোমার মাধ্যমে জানতে পারলাম, হলের নিরাপত্তার জন্য আমি আনসার এবং সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেব। এছাড়া প্রক্টরকেও আমি বিষয়টি অবহিত করব।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন  বলেন, আমি বিষয়টি সম্পর্কে জানতাম না। শিক্ষার্থীর কাছ থেকে আমরা এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি।

হল গেটের লাইট বন্ধ করে শিক্ষার্থীকে মারধরের বিষয়টি কিভাবে দেখছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, একজন শিক্ষার্থী অন্য একজন শিক্ষার্থীকে মারধরের বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। অভিযোগ পেলে শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে এ বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

উল্লেখ্য, ইদানীংকালে জুনিয়র শিক্ষার্থী কর্তৃক সিনিয়রদের লাঞ্ছিত ও মারধরের ঘটনা হরহামেশাই ঘটছে বলে ক্যাম্পাসক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানা যায়। তারা বলেন, অতি সামান্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্বে জড়াচ্ছে শিক্ষার্থীরা। এতে একদিকে যেমন সিনিয়র-জুনিয়রদের মধ্যকার সম্পর্কের অবনতি হচ্ছে ঠিক তেমনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট হচ্ছে এমন ঘটনার।