28.3 C
Bangladesh
শনিবার, সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৪

দুর্গাপূজা নিয়ে ববি’র সনাতনি শিক্ষার্থীদের ভাবনা

মতামত ও ফিচারদুর্গাপূজা নিয়ে ববি'র সনাতনি শিক্ষার্থীদের ভাবনা
পূজার বাঁশি বাজে দূরে ,
মা আসছেন বছর ঘুরে।
শীউলিৱ গন্ধে আগমনী ,
কাশের বনে জয়ধ্বনি।
নীল আকাশে মাকে খুঁজো ,
হাসি খুসি কাটুক পূজো।
প্রতিটি নারীই মাতৃস্বরূপা…….
সারাদেশে এবার ৩২ হাজার ১৬৮ টি মণ্ডপে পূজা উদযাপন হবে বলে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ জানিয়েছে। করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে গত দু্ই বছর সীমিত পরিসরে অনুষ্ঠিত দুর্গাপূজা এবার উৎসবের রঙে ফিরেছে। শরৎকাল পরার সাথে সাথেই  কাশফুলের শুভ্রতা এবং শিউলি ফুলেৱ সুবাশ যেন বারবার মনে করিয়ে দেয়,  মা আসছেন বছর ঘুরে। দুর্গাপূজা বাঙালি হিন্দুদের জন্য একটি বড় উৎসব। আৱ তাই তো, এটি বাঙালিদেৱ আবেগ, অনুভুতি এবং  সংস্কৃতিৱ সাথে ওতোপ্রতোভাবে জড়িত। যেসব  শিক্ষার্থীরা তাদের পড়াশুনাৱ জন্য পরিবার ছেড়ে বাইরে থাকে, তাদেৱ কাছে এই অনুভুতিটা যেন ভাষায় প্রকাশ করার মত না। পূজো নিয়ে শিক্ষার্থীদের মতামত জানতে চাইলে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন জন শিক্ষার্থী সুস্মিতা দত্ত অথৈ, শুভব্রত মণ্ডল শুভ, রাহুল দেব মল্লিক বলেন:

প্রতিটি নারীই মাতৃস্বরূপা:
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। দুর্গাপূজা শুধু মাত্র একটি উৎসবই না, এটি জাতি, বর্ণ, ধর্ম  নির্বিশেষে সাধারণ মানুষের মিলনমেলা। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা সারা বছর অপেক্ষায় থাকে এই শারদোৎসবের। দেবী দুর্গার আগমনে এই ধরনী তল পবিত্র হয়, সকল রকম অন্যায়, অবিচার,  অত্যাচার ,শোষণ ,পাপ কর্ম থেকে উদ্ধার করে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করে। দেবী দুর্গা শক্তির প্রতীক। তারুণ্যের প্রধান চালিকাশক্তি হলো শক্তি। যেই শক্তি দেবী দুর্গা বহন করে চরেছে। দেবী দুর্গা অন্যায়ের বিনাশ করতে আবির্ভাব হয়েছেন। অন্যায়ের স্বরূপ মহিশাসুরকে বধ করে সত্য প্রতিষ্ঠা করেছেন। এটা থেকে তরুণ সমাজ উজ্জীবিত হয়ে শিক্ষা লাভ করতে পারে, সমাজের সকল প্রকার অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে শোষণমুক্ত সমাজ গঠনের এবং অবশ্যই দেবী দুর্গা নারীশক্তির প্রতীক। পৃথিবীর সকল প্রকার নারীই দেবীর বহিঃ প্রকাশ, প্রতিটি নারীই মাতৃস্বরূপা। আমাদের বর্তমান সমাজের প্রেক্ষাপটে দেখতে পাই নারীদের প্রতি অবহেলা, নির্যাতন, শোষণ যা কখনোই কাম্য নয়। আমাদের উচিৎ নারীদেরকে যথাযথ শ্রদ্ধার সাথে সম্মান করা। সমাজের প্রতিটি প্রাণে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি ছড়িয়ে পড়ুক। তারুণ্যের মধ্যে জেগে উঠুক শুভ শক্তির ধারা। পৃথিবী থেকে দুর হোক অশুভ শক্তির ছায়া। তরুণদের মধ্য দিয়ে প্রতিটি পুজা সুষ্ঠু ও সুন্দর ভাবে পরিচালিত হোক এই বার্তা সকলের জন্য।

প্রতিটি নারীই মাতৃস্বরূপা
শিক্ষার্থী:সুস্মিতা দত্ত অথৈ,সমাজবিজ্ঞান বিভাগ,বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়।
দুর্গাপূজা অসাম্প্রদায়িক
চাতকীর ন্যায় অপেক্ষায় প্রহর গণনা শুরু দূর্গা পূজার জন্য:
মহালয়ার মধ্যে দিয়েই দেবীপক্ষের সূচনা ঘটে অর্থাৎ দুর্গাপূজার সময় শুরু এবং দেবী দুর্গার ষষ্ঠী পূজার মধ্যে দিয়ে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। শরৎকালে দেবী দুর্গার পূজা অনুষ্ঠিত হয় এজন্য শারদীয় দুর্গাৎসবও বলা হয়।শরৎের কাশফুলের শুভ্রতার ন্যায় সনাতনীদের মন এই উৎসবের জন্য প্রতীক্ষায় থাকে কারণ বছরে ঘুরে এই উৎসব একবার হয়৷ “পূজা যার যার, উৎসব সবার ” এই প্রতিপাদ্য সামনে রেখে পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। আর এই উৎসব একমাত্র উৎসব যেইখানে বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র তার প্রতিফলন দ্রুতি ঘটায়। কোন জাতিভেদ কোন ধর্মভেদ না রেখে সবাই এই শরৎ উৎসবে মেটে উঠে। এই উৎসব আমাদের দেশের একমাত্র যেখানে সনাতনীদের এক ছাদের ছায়াতলে রাখে।আর এইজন্য সনাতনীরা চাতকী ন্যায় অপেক্ষায় থাকে।
চাতকীর ন্যায় অপেক্ষায়
শিক্ষার্থী:শুভব্রত মন্ডল শুভ,গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ,বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়।
দুর্গাপূজা অ
দুর্গাপূজা অসাম্প্রদায়িক উৎসবে পরিণত হয়েছে:
দূর্গা পূজা হচ্ছে সনাতনীদের সবচেয়ে বড় উৎসব।শরৎ এর বাতাস শভ্র কাশফুলের দোলা, বাতাসে শিউলি ফুলের গন্ধে বোঝা যায় দেবী দূর্গার আগমন ঘটছে। সাধারণত আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠ থেকে দশম দিন পর্যন্ত শারদীয়া দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এই পাঁচটি দিন যথাক্রমে “দুর্গাষষ্ঠী”, “দুর্গাসপ্তমী”, “মহাষ্টমী”, “মহানবমী” ও “বিজয়াদশমী” নামে পরিচিত। আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষটিকে বলা হয় “দেবীপক্ষ”। দেবীপক্ষের সূচনার অমাবস্যাটির নাম মহালয়া। দেবীপক্ষের মধ্যে দুর্গা পূজার ভাব মূলত বাঙালিদের শুরু হয়। দুর্গা পূজা মূলত সনাতনীদের উৎসব হলে বর্তমানে এটি অসাম্প্রদায়িক উৎসবে পরিণত হয়েছে। পূজা অর্চনা সনাতনীদের কেন্দ্র করে হলেও উৎসবমুখর সকল শ্রেণীবিন্যাসের মানুষ।সনাতনীদের কাছে থেকে নাড়ু-লুচি খাওয়ার আগ্রহে থাকে অন্য ধর্মের মানুষ যা একটা অসাম্প্রদায়িকতার চিহ্ন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন তারও একটার রুপরেখার ভিত্তি এটি বললে চলে। তাছাড়া জাতি বর্ণ ধর্ম নিবির্ষে একটা রঙিন উৎসবে মেটে উঠে সবাই।
শিক্ষার্থী:রাহুল দেব মল্লিক,ইংরেজি বিভাগ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়।

Check out our other content

Check out other tags:

Most Popular Articles